Qshop App

নোভেল করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে তার দ্বিতীয় ঢেও বিস্তার করা শুরু করেছে। সরকার ফেব্রুয়ারি থেকে করোনা ভেক্সিন আনুস্টহানিকভাবে দেওয়া শুরু করলেও তা ফলপ্রসূ খুব একটা লাভ জনক হয়নি। মার্চের প্রথম থেকেই করোনার প্রভাব বাড়ছিল প্রতিনিয়ত। পূর্বের ন্যায় প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছিল হাজার তিনএক। ভাইরাসের তান্ডবে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরোপারে পাড়ি দিচ্ছিলেন প্রতিদিন গোটা পঞ্চাশেক মানুষ। আমরা তাদের মাগফিরাত কামনা করি। গত দুদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন করে জারি করেছে প্রজ্ঞাপন। দিয়েছে ১৮ টি নতুন নির্দেশনা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পূর্বের ন্যায় বাস সমূহে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশের প্রতোত্তরে বাস মালিকরা পূর্বের ন্যায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। সরকার সেই দাবি মেনেও নিয়েছে। আজ থেকে কার্যকর হয়েছে এই নির্দেশ। তবে সকল অফিস আদালত, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক সেটাই ভাবনার বিষয়। ১০টা টু ৫টা অফিস টাইম সবার জন্যই বরাদ্ধ আছে। ব্যস্তততার শহরে মানুষ চলছেও সেই গতিতে। তবে হটাৎ করে বাসের হাফ সিট এবং ভাড়া ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি দুর্ভোগে ফেলেছে সাধারণ মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষদের। সকাল থেকে লাইন ধরে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে পরিবহনের জন্য। পরিবহন আসলেও সেটা হয় নির্ধারিত যাত্রীতে পরিপূর্ণ। ফলে চাইলেও উঠতে পারছেন না সেই বাসে। কিছু কিছু অসাধু পরিবহণ মালিকরা প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে উঠাচ্ছে অতিরিক্ত মানুষ। আবার তাদের কাছথেকে আদায় করছে দ্বিগুণ ভাড়া। ফলে ব্যাপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষজন। এমতাবস্থায় মাইলের পর মেইল পায়ে হেটে গন্তব্যে যাওয়ার পথ বেঁছে নিয়েছেন অনেকেই।

এদিকে নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকার ৩০ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিলেও কোভিড-১৯ এর কারণে সেই বন্ধ বাড়িয়ে ২৪ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। ফলে যে সকল শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন ছোট শহর গুলো থেকে বিভাগীয় শহরে এসেছিলেন, তারাও যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন। এমতাবস্থায় দূর পাল্লার বাসের ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীই সেই ভাড়া পরিশোধ করতে অক্ষম। শিক্ষার্থীদের বাজেটের মধ্যে সবচেয়ে ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল রেল পথে। আবার আগামি ৪ এপ্রিলের পর থেকে রেলওয়ে পথে যাতায়াত ব্যবস্থায় আসন সংখ্যা করা হয়েছে অর্ধেক। টিকিট ছাড়া কেউ ট্রেনে যাতায়াতও করতে পারবেন না। এবস্থায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া নিতান্তই সোনার খনি পাওয়ার শামিল। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থীরই বাড়ি ফেরা অনিশ্চয়তার মধ্যে বিরাজমান।
সরকারের হটাত এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে সাধারণ নিম্নবিত্ত জনসাধারণ। সরকারের উচিত ছিল কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে নোটিশ দিয়ে এসব প্রজ্ঞাপন কার্যকর করা। এরকম হলে সাধারণ মানুষ সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে চলতে পারতো। শিক্ষার্থীরাও ফিরে যেতে পারতো নিজেদের বাড়িতে। ফলে বিভাগীয় শহর গুলাতে জন দুর্ভোগ কিছুটা কমত। সাধারণ মানুষ খুব একটা কষ্টের স্বীকার না হয়েই যাতায়াত করতে পারতো নিজ নিজ গন্তব্যে। সরকার যদি পুরো ব্যাপারটা বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে পরিকল্পনার আওতায় এনে সাজাতো তাহলে অনেকটাই দুর্ভোগ হ্রাস পেত। যেখানে আমরা সরকারের হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করেছি। যা মঙ্গলময় নয় দেশের মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত শ্রেণির জন্য।

লেখকঃ গোলাম শাফিউল আলম মাহিন
শিক্ষার্থী, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা, হবিগঞ্জ পৌর শাখা।
মোবাইলঃ ০১৭৭-৯৪৫৪৭২১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *